❝শাইখ জারিহ(কাল্পনিক চরিত্র) তার পা গুটিয়ে বসলেন, ‘আমামাহ ঠিক করলেন এবং তাঁর চারপাশে বসে থাকা ছাত্রদের দিকে মুখ ফেরালেন। তারা এমনভাবে বসেছিল যেন তাদের মাথার ওপর পাখি বসে আছে। শাইখ বললেন,
“বৎস, গতকালের পাঠে আমরা কোথায় পৌঁছেছিলাম?”
ছাত্র বলল,
“আমরা এই বক্তব্যে পৌঁছেছিলাম: ‘জামাআহ হচ্ছে সেটাই যা হকের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, এমনকি তুমি যদি একাও হও।’”
শাইখ বললেন,
“হ্যাঁ, হ্যাঁ, এবং আমি বলেছিলাম: হক্ব হচ্ছে সেটাই যা আমাদের পবিত্র জামাআহ অনুসরণ করে। আর যে ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে, সে জামাআহ থেকে বের হয়ে গেছে, সে দ্বীনে বিদআত সৃষ্টি করেছে এবং মুমিনদের পথের বিরুদ্ধে গিয়েছে, এবং…”
হঠাৎ, দরজায় জোরে কড়া নাড়ার শব্দ শোনা গেল…
শাইখ তাঁর কথা থামালেন এবং একজন ছাত্রকে দরজা খুলতে বললেন। সে দরজা খুললে দেখা গেল একজন এলোমেলো চুলের, কালো মুখের লোক দাঁড়িয়ে আছে, চিৎকার করে বলছে,
“হে শাইখ… হে শাইখ… আদিলের বাড়িতে আগুন লেগেছে…”
শাইখ বসা অবস্থাতেই উৎসের দিকে ফিরে বললেন,
“তা আমার কী করার?”
লোকটি বলল,
“আমরা চাই আপনি এবং আপনার ছাত্ররা আমাদের সাহায্য করুন…”
শাইখ বললেন,
“তোমরা কি চাইছো আমি আদিলের গাফিলতির কারণে যা নষ্ট হয়েছে তা ঠিক করবো?”
লোকটি বলল,
“হে শাইখ, বাড়ির ভেতরে নারী ও শিশু রয়েছে!”
শাইখ বললেন,
“সে-ই দায়ী, এটা তার গাফিলতির ফল।”
তিনি দরজা খোলা ছাত্রকে ইঙ্গিত করলেন, সে দরজা বন্ধ করে বসে পড়ল। শাইখ আবার পাঠ শুরু করলেন,
“জেনে রাখো, হে বৎসগণ, যে ব্যক্তি আমাদের জামাআতের বিরুদ্ধে কথা বলে সে একজন বিভ্রান্ত, বিদআতি এবং খবীস।”
একজন ছাত্র প্রশ্ন করল,
“যদি সে আহলুস সুন্নাহর কেউ হয়?”
শাইখ বললেন,
“তা কীভাবে সম্ভব? এখনো বুঝতে পারোনি? যে ব্যক্তি আমাদের জামাআহ সম্পর্কে কথা বলে, সে কিভাবে আহলুস সুন্নাহর হতে পারে? সে বিদআতি, বরং সে প্রকাশ্য বিদআতির চেয়েও খারাপ, কারণ সে মানুষের ওপর ধোঁকা দেয়…”
আবার দরজায় আগের চেয়ে জোরে কড়া নাড়ার শব্দ হলো।
একজন ছাত্র দরজা খুলল। আগের সেই লোকটি আবার এসে বলল,
“হে শাইখ… আগুন এখন সালিহের বাড়িতে পৌঁছেছে!”
শাইখ বললেন,
“সালিহ? তুমি কি সেই বিদআতির কথা বলছো?”
লোকটি বলল,
“হে শাইখ… আগে ওদের বাঁচান, পরে উপদেশ দিন!”
শাইখ বললেন,
“এটা আল্লাহর তরফ থেকে সেই বিদআতির জন্য দ্রুত শাস্তি।”
তিনি ইঙ্গিত করলেন, দরজা বন্ধ করে দেওয়া হলো।
শাইখ আবার বললেন,
“দেখো, কী দ্রুত শাস্তি দিয়েছেন আল্লাহ এই খবীস বিদআতিকে, যে আহলুস সুন্নাহর ছায়ায় লুকিয়ে ছিল। কিন্তু যখন সে আমাদের পবিত্র জামাআহ সম্পর্কে কথা বলল, আল্লাহ তার মুখোশ খুলে দিলেন এবং শাস্তি বাড়িয়ে দিলেন—ফলে তার ঘর পুড়ে গেল!”
এক ছাত্র বলল,
“হে শাইখ… আমি সালিহকে চিনি… তার কোনো বিদআত দেখিনি!”
শাইখ বললেন,
“তুমি এখনো জারহ ও তাদীলের জ্ঞান অর্জন করোনি। এ কারণেই বলি: যে ব্যক্তি সুন্নাহর আড়ালে লুকিয়ে থাকে সে সেই প্রকাশ্য বিদআতির চেয়েও বিপজ্জনক। আমি তাকে মসজিদে বহুবার দেখেছি, সে আমার দিকে তাকায় না, সালাম দেয় না, আমায় এড়িয়ে চলে।”
ছাত্র জিজ্ঞেস করল,
“এটা কি বিদআত?”
শাইখ বললেন,
“হ্যাঁ, হ্যাঁ! সে যদি আমাদের পবিত্র জামাআহর হতো, তবে অবশ্যই আমাদের সালাম দিত!”
তৃতীয়বারের মতো দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ হলো। দরজা খুলতেই লোকটি চিৎকার করে বলল,
“হে শাইখ… আগুন মসজিদ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে!”
শাইখ বললেন,
“আমি এমনটাই অনুমান করেছিলাম, কারণ মসজিদ নিজেকে বিদআতিদের নামায থেকে রক্ষা করতে পারেনি। আর তুমি আমাদেরকে অনেক বিরক্ত করছো হে ব্যক্তি! আর এসো না আমাদের কাছে!”
লোকটি বলল,
“হে শাইখ… কিন্তু মসজিদ!”
শাইখ বললেন,
“মসজিদ হলেও… এর সব দোষ আদিলের, সে-ই দায়ী।”
তিনি আবার ইঙ্গিত করলেন, দরজা বন্ধ হয়ে গেল।
তিনি বললেন,
“দেখো বিদআতিদের কী ক্ষতি! আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তি নেই… এমনকি মসজিদও রক্ষা পেল না!”
এক ছাত্র জিজ্ঞেস করল,
“হে শাইখ… আমরা কি মসজিদের আগুন নেভাতে সাহায্য করবো না?”
শাইখ কাশি দিয়ে বললেন,
“হে বৎস… আগুন নেভাতে যারা আগ্রহী, তারা হলো বিভিন্ন শ্রেণির লোক—কিছু বিদআতি, কিছু পাপাচারী। আমাদের জামাআহ তাদের থেকে মুক্ত। আমরা যদি তাদের সাহায্য করি, তাহলে আমাদের ওপরও কোনো ক্ষতি আসতে পারে।”
তিনি একজন ছাত্রের দিকে ফিরে বললেন,
“পড়ো, আল্লাহ তোমায় বরকত দিন।”
কিন্তু সে পড়া শুরু করার আগেই এক প্রচণ্ড শব্দ তাদের চমকে দিল…
তারা সবাই—শাইখসহ—দৌড়ে গেল দরজার দিকে…
দরজা খুলে বের হতেই তারা দেখল—তাদের নিজেদের ঘরের দেয়াল ভেঙে পড়েছে…
এবং আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে…❞
__
শাইখ নাসির আল-ফাহদ (فرج الله عنه)
তারিখ: ২রা যুলক্বদাহ, ১৪২২ হিজরি
(আজ থেকে ২৪ বছর আগে)109:43 AM
আল্লাহ ﷻ আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন।
আমীন
Ikhwah